“ভয়মুক্ত সমাজ,দুর্নীতিমুক্ত রাজনীতি বাংলায় প্রতিষ্ঠা করার স্বার্থেই আমাদের লড়াই”
প্রিয় রাজ্যবাসী, কলম ধরতে হল দলের বিশেষ এক সন্ধিক্ষণে।সন্ধিক্ষণ এই জন্য বলছি কারণ বঙ্গ বিজেপির অনেক নেতাদের মধ্যের ক্ষোভ,এসন্তোষ দল ছাড়া নিয়েে গেল গেল রব তুলতে চাইছে দিদির প্রসাদ প্রাপ্ত মিডিয়ার লোকেরা। দুটি প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমের কাছে একান্ত সাক্ষাতকারে আমি যে কথা বলেছি আবারও সেই কথা বলতে চাই, বুথ স্তরের কর্মী থেকে সর্বভারতীয় কার্যকর্তা সকলেই জানেন যে আমাদের দলের সাংগঠনিক কাঠামো। কিন্তু যারা জানেন না তাদের জন্যই আজকের এই লেখা। সাধারণ মানুষেরা একেবারেই বঙ্গ বিজেপির টালামাটাল অবস্থা বলে ভাববেন না । পুরোনো সরে গিয়ে নতুনকে জায়গা করে দেওয়া,নব রূপে তাদেরকে দেখা,তাদের শক্তি পরীক্ষা করাই আমাদের দলের রেওয়াজ। দিনের পর দিন যারা সংগঠনে অগ্রণী ছিলেন তাদেরকে ছেড়ে দিতে হয়।আমি সর্বাধিক সময় ধরে প্রদেশের সভাপতি ছিলাম, আমার সময়ে যে দল সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছে,সেকথা কেউ অস্বীকার করতে পারবেন না কখনো।আমি নিজেই সেই পদ ছেড়ে দিয়েছি সর্বভারতীয় নেতাদের কাছে আর্জি জানিয়ে।
নতুন যারা কার্যভার গ্রহণ করেছেন তাদের সময় দিতে হবে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করার । নতুন কার্যকর্তারা তাদের নিজেদের টিম তৈরি করবেন নিশ্চয়ই সেক্ষেত্রে যারা ছেড়ে গেলেন তাঁদের কাজ দিতে হবে । এতদিন লাগাতার কোথাও না কোথাও নির্বাচনের কাজ ছিল, তাই সাংগঠনিকভাবে সকলকে পাওয়া যাচ্ছিল না । এবার লাগাতার আন্দোলের মধ্যে দিয়ে দল রাস্তায় নেমেছে। বঙ্গ বিজেপির সংঘব্ধ রূপ আবার সবার সামনে আসবে।
বিজেপির মত সর্বভারতীয় দল যাদের মজবুত সাংগঠনিক কাঠামো তাদের কখনো ব্যাক্তি অনুগামীতে বিশ্বাসী কর্মী হয় না। দলের আদর্শ,নীতিকে সামনে রেখে দল এগিয়ে যায়। কর্মীরাও সেভাবেই এগোয়। তাই যারা বিভাজনের চেষ্টা করছেন তারা কখনই সফল হবেন না । অনেকের ক্ষোভ থাকতেই পারে, তা দেখার জন্য দিল্লির অভিভাবকেরা আছেন । তাঁদের কাউকে কাউকে দায়িত্ব দিয়ে রাখা হয়েছে। সেগুলি তাঁরা শুনবেন। আমিও নানা সময়ে দলের সুবিধে অসুবিধে নিয়ে আলোচনা করেছি। এটি একটি প্রক্রিয়া,যা সারাবছর ধরে চলতে থাকে। তৃণমূল থেকে যারা এসেছিলেন,তাঁদের মধ্যে কাউকে মাথায় করে রাখা হচ্ছিল নির্বাচনের আগে। তাঁদের উপর আস্থার জায়গা ভুল ছিল প্রমাণিত হয়েছে। তাই যা হওয়ার হয়েছে । তবে ৩ বিধায়ক থেকে ৭৭ এ নিয়ে যাওয়াটা ছোট করে দেখলে মোটেই চলবে না । আমরা যেমন ক্ষমতায় আসতে পারিনি সত্যি,তেমন রাজ্যের মানুষ তাদের অভাব অভিযোগ,ক্ষোভ অসুবিধের কথা তুলে ধরতে আমাদের বিরোধীদের আসনে বসিয়েছে। আমরা সেই কর্তব্যই পালন করবো নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে।
রাজ্যে আজকাল আর আইনের শাসন নেই । রাস্তায় প্রকাশ্যে দিবালোকে মানুষকে কোপানো হচ্ছে।পুলিশের কোন ক্ষমতা নেই । যা আছে তা হল মমতার তাঁবেদারী করার মানসিকতা। তাই এই পন্থী ও পন্থী নয়, পুরো তৃণমূল দলটাকেই সমূলে উপড়াতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নন্দীগ্রামের মানুষ যোগ্য জবাব দেওয়ার পরেও ব্যাকডোরে তিনি আবার জুড়ে বসেছেন । তাঁকে তাঁর দলের নেতা-নেত্রীরাই চাইছে না ।তাও গদি আঁকড়ে বসে আছেন। যারা ৫০০টাকার লোভে ভোট দিয়েছেন,তাঁরাও এবার বুঝেছেন কী ভুল করেছেন এই সরকারকে এনে। খুন,ধর্ষণ থেকে আমাদের মত বিরোধীদের তো ছেড়েই দিন,রেহাই পাচ্ছেন না তাঁরাও। বিরোধীদের অনেকেই দোকান,বাড়ি,গোরু-ছাগল সব খুইয়েছেন, তবুও দলের কর্মসূচিতে আসা থামাননি। আমাদের রাজ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মহামিছিল তারই প্রমাণ। আগামীতে এই আন্দোলনের ঝাঁঝ আরও বাড়বে। বন্ধ হবে না যতদিন না পর্যন্ত এই রাজ্যে গণতন্ত্র আমরা প্রতিষ্ঠা করতে পারি,আর হিংসামুক্ত রাজনীতির পরিবেশ নিয়ে না আসতে পারি।